বর্ষার মরসুম শুরু হয়েছে। আর হঠাৎ করেই বাড়ছে ‘জয় বাংলা’য় আক্রান্তের হার। ছোটদেরই এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। তবে বড়দের যে হচ্ছে না তা নয়। বরং বড়দেরও হতে পারে একই সমস্যা। প্রসঙ্গত, ‘জয় বাংলা’ আদতে কনজাংটিভাইটিস নামে একটি বিশেষ সমস্যাকে বলা হয়। এই সমস্যায় চোখ টকটকে লাল হয়ে যায়। চোখে চুলকানি বেড়ে যায়। অনবরত জল পড়তে থাকে। এই অবস্থায় বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকাও যেন ভীষণ কষ্টের। তবে এই ‘জয় বাংলা’ নিয়েও অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকের বিশ্বাস কারও ‘জয় বাংলা’ হলে তার চোখের দিকে তাকাতে নেই। তার চোখের দিকে তাকালে যে তাকিয়েছে তারও একই রোগ হতে পারে। কিন্তু আদৌ কি এ কথা ঠিক? দিশা আই হসপিটালের চিকিৎসক সোহম বসাক এই ব্যাপারে মূল্যবান তথ্য জানান হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে।
(আরও পড়ুন: বর্ষার সর্দিকাশি দূর হবে হেঁশেলের এই উপকরণেই, কখন কতটা খাবেন জেনে নিন )
কোন ভাইরাস দায়ী?
প্রথমে জেনে নেওয়া যাক, কোন ভাইরাসের কারণে এত কাণ্ড ঘটছে। এই অসুখের পিছনে অ্যাডিনো ভাইরাসই আপল কালপ্রিট। ভাইরাস চোখে পৌঁছেই বংশবিস্তার করতে শুরু করে। তার পর চোখের সাদা অংশ বা কনজাংটিভায় সংক্রমণ ঘটায়। কনজাংটিভাতে সংক্রমণ ঘটায় বলেই এই রোগকে কনজাংটিভাইটিস বলে।
(আরও পড়ুন: পেটের রোগও বাড়ছে বর্ষায়! ৫ উপায় মানতে পারলেই সুস্থ থাকবেন )
কী কী লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?
চোখ লাল হয়ে যাওয়া কনজাংটিভাইটিস বা ‘জয় বাংলা’র প্রধান লক্ষণ। এছাড়াও চোখ দিয়ে জল পড়া, চোখে চুলকানি হওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া ও চোখ জ্বালা করার মতো লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হন।
(আরও পড়ুন: সর্দিকাশি ভুলে যাবে শরীর, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে ৫ খাবার )
আক্রান্ত রোগীর চোখের দিকে তাকালেই কি সংক্রমণ ছড়াতে পারে?
চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সোহম বসাক জানাচ্ছেন, আক্রান্ত রোগীর চোখের দিকে তাকালেই ‘জয় বাংলা’ হবে – এ একেবারেই ভুল ধারণা। এই রোগের ভাইরাস মূলত সারফেস বা তলের সংস্পর্শে এসে ছড়ায়। অর্থাৎ আক্রান্ত রোগী যদি চোখে হাত দেওয়ার পর কোনও স্থানে হাত দেন, সেখানে ভাইরাস ছড়াতে পারে। সেই স্থানে হাত দেওয়ার পর সুস্থ ব্যক্তি চোখে হাত দিলে ওই ভাইরাস আবার সক্রিয় হয়ে যাবে। ফলে তখনই সুস্থ ব্যক্তি কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হবেন। তবে বায়ুর মাধ্যমেও ছড়াতে পারে এই রোগ। চিকিৎসকের কথায়, ফ্যারিঙ্গোকনজাংটিভাল ফিভার বা জ্বর হলে হাঁচি কাশি হয়। তখন বায়ুর মাধ্যমেও ছড়ায় এই রোগ। তবে তাকানোর সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই বলেই জানান তিনি।
(আরও পড়ুন: হজম থেকে শরীর চাঙ্গা রাখা, ৫ গুণেই রোজের সেরা খাবার রসুন )
রোগ প্রতিরোধে কী কী করণীয়?
১. রোগীকে যতটা সম্ভব আলাদা ঘরে রাখতে হবে। এতে ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা কম।
২. চোখে হাত দেওয়ার অভ্যাস কমাতে হবে।
৩. আক্রান্তের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব রেখে চলুন। কারণ স্পর্শের মাধ্যমেই ছড়ায় এই ভাইরাস। তবে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা যেতেই পারে। তাতে কোনও অসুবিধা নেই।