দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত: নিন্দা ও প্রতিবাদ

শুক্রবার (২৯ জুলাই) বাইতুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশ শেষে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হাফেজ রেজাউল করিম (২১) নামে কওমি মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

রবিবার (৩০ জুলাই) এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হাফেজ রেজাউল করিম নামে কওমি মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আমরা নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। হাফেজ রেজাউল করিম শেরপুরের নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের বড় ছেলে। সে যাত্রাবাড়ী জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। নিহত হাফেজ রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডের সময় অসুস্থ অবস্থায় তার বোনের বাড়ি থেকে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিল। সে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনও রূপ যুক্ত ছিল না।

হেফাজত নেতারা বলেন, অনতিবিলম্বে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে হাফেজ রেজাউল করিমের হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের চিহ্নিত করতে হবে। অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আমরা নিহতের পরিবারকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসলামী আন্দোলন। রবিবার এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, রেজাউল কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী নয়। কথিত শান্তি সমাবেশের আয়োজক যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সন্ত্রাসীরা হাফেজ রেজাউলকে রাজপথে নির্মমভাবে খুন করেছে। এই খুনের সঙ্গে কারা জড়িত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা নিশ্চয়ই তা জানেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। নয়তো গোটা বাংলাদেশের ইসলামপন্থি ছাত্র-জনতা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।

হাফেজ রেজাউল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কওমী ছাত্র ফোরাম। রবিবার (৩০ জুলাই) সংগঠনটির আহ্বায়ক তানজিল আমির ও সদস্য সচিব জামিল সিদ্দিকী এক বিবৃতিতে বলেন, জন্ডিস আক্রান্ত রেজাউলের শরীরে জ্বর ছিল। ওষুধ কিনতে ঢাকার গুলিস্তানে গিয়েছিল সে। সেখানে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে আটকে মারপিট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। একজন অসুস্থ মানুষ ওষুধের প্রয়োজনে বেরিয়েছে- তার এমন মৃত্যু অনাকাঙ্খিত, বর্বর ও হতাশার। কোনও সভ্য সমাজে এমন ঘটনা ঘটতে পারে না, ঘটলেও কেউ নির্বিকার থাকতে পারে না। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনও মামলা ও আসামিদের গ্রেফতার না হওয়া হতাশাজনক। ওই এলাকার সব সিসিটিভি ও ভিডিও ফুটেজ চেক করে খুনিদের চিহ্নিত করতে হবে। সংঘর্ষে জড়িত মূল হোতাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া হাফেজ রেজাউলের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।