Haryana Violence: হিংসার পরে নুহ জেলায় ১২০৮ বিল্ডিং ভেঙেছে সরকার, বেশিরভাগই নির্দিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের

গতমাসের শেষদিনে শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক হিংসার পর থেকে নুহ জেলার ১১টি শহর ও গ্রামে মোট ১২০৮টি বিল্ডিং ভেঙেছে হরিয়ানা সরকার। মোট ৩৭টি সাইটে ৭২.১ একর জমির ওপরে থাকা বসতি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর এর মধ্যে বেশিরভাগ বিল্ডিংয়েই বাস ছিল মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের। সরকারি তথ্য অনুসারে, ভেঙে ফেলা বিল্ডিংগুলি নুহ, নলহার, পুনহানা, টাউরু, নাঙ্গল মুবারকপুর, শাহপুর, আগান, আদবর চক, নলহার রোড, তিরঙ্গা চক এবং নাগিনায় আছে। এই নিয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের বিশেষ দায়িত্বের কর্মকর্তা (ওএসডি) জওহর যাদব দাবি করেন, ১ অগস্ট স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে বসে হিংসায় যুক্তদের চিহ্নিত করা হয়। এরপরই তাদের বিল্ডিং ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যাদব দাবি করেন যে সমস্ত নিয়ম অনুসরণ করেই বিল্ডিংগুলি ভাঙা হয়েছে। এই অভিযানের আগে নাকি তারা আইনি মতামতও নিয়েছিল এবং সমস্ত রেকর্ড পরীক্ষা করেছিল। এদিকে ভেঙে ফেলা বিল্ডিংয়ের অনেকগুলিতে থাকত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।

প্রসঙ্গত, এর আগে নুহ জেলার এসপি নরেন্দ্র বিজরনিয়া দাবি করেছিলেন, হরিয়ানায় বেআইনি ভাবে বসাবসরত বেশ কিছু রোহিঙ্গা ৩১ জুলাইয়ের হিংসায় যুক্ত ছিল। এই রোহিঙ্গারা পাথর ছুঁড়েছিল বলে অভিযোগ। এই আবহে পুলিশ সুপার জানান, তারা দোষীদের চিহ্নিত করে একটি তালিক বানিয়েছে। এবং প্রমাণের ভিত্তিতেত অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ১৭ জন রোহিঙ্গা রয়েছে পুলিশের সন্দেহের তালিকায়।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় হরিয়ানার নুহ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। উল্লেখ্য, হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় গতকাল হিংসা ছড়ায়। গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে খুন করার ঘটনায় মনু পলাতক। সেই মনু ভিডিয়ো পোস্ট করে দাবি করেছিল এই ধর্মীয় মিছিলে সে থাকবে। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। সেই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ।

সেদিন সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে হিংসা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি। হিংসার ঘটনায় দুই হোমগার্ড সহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু ঘটেছে। মৃত হোমগার্ডদের নাম – নীরজ এবং গুরুসেবক। ঘটনায় জখম আরও অন্তত ২০০ জন। পরে অন্যত্র হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। রাতে সেক্টর ৫৭-এর মসজিদে হামলা হয়েছিল। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মসজিটিতে। সেখানে চালানো হয়েছিল গুলি। তাতে মৃত্যু হয়েছিল এক ইমামের। জখম হয়েছিলেন আরও তিনজন।