ছাগলকে বাঁচাতে কুয়োতে ঝাঁপ দিলেন বাবা-ছেলে, উদ্ধার নিথর দেহ

ঝাড়খণ্ডের সাহিবগঞ্জে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বাবা, পুত্র দুজনেরই মৃত্যু। কিন্তু তার নেপথ্যে অবশ্য় অন্য ঘটনা রয়েছে। সূত্রের খবর, তাদের ছাগলটি কুয়োতে পড়ে গিয়েছিল। আর বাবা ও ছেলে সেই ছাগলের খোঁজ করছিলেন। সেই ছাগল খুঁজতেই তারা কুয়োতে নামেন। কিন্তু আর উঠতে পারেননি তাঁরা। শেষ পর্যন্ত আত্মীয় স্বজন পাড়াপ্রতিবেশীরা ওই কুয়ো থেকে দুজনকে উদ্ধার করেন। এরপর দুজনের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কীভাবে ঘটনাটা হল?

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, কেন্দুয়া চক এলাকায় ইকবাল শেখ নামে ওই ব্যক্তির ছাগলটি কোনওভাবে কুয়োতে পড়ে গিয়েছিল। সেই ছাগলটিকে বাঁচাতে ইকবালের ছেলে মুন্তাকিম প্রথমে কুয়োতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু কুয়োর ভেতরে গিয়ে মুন্তাকিম অজ্ঞান হয়ে যান। তার বয়স ১৯ বছর। এদিকে ছেলেকে উদ্ধার করতে বাবা ইকবালও কুয়োতে নেমে পড়েন। কোমরের সঙ্গে দড়ি বেঁধে তিনিও কুয়োতে নেমে পড়েন। প্রথমে ছেলেকে তোলেন ইকবাল। এরপর ছাগলটিকেও কুয়ো থেকে তোলা হয়। সবশেষে ইকবালকে কুয়ো থেকে তুলতে হবে। তার কোমরে দড়ি বাঁধা রয়েছে। কিন্তু তিনি উঠতে পারছিলেন না।

এদিকে কুয়োর চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন কুয়োতে দড়ি ছোঁড়েন। কিন্তু ততক্ষণে কুয়োর মধ্য়ে অজ্ঞান হয়ে যায় ইকবাল। তিনি ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়েছেন। তাকে কুয়ো থেকে তোলার মতো পরিস্থতি কারোরই নেই। কারণ সকলেই ভয় পাচ্ছেন। পাছে যদি কিছু হয়ে যায়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ ইকবালকে কুয়ো থেকে উদ্ধার করে। এবার প্রশ্ন ছাগলটির কী হল? ইকবালের ছেলের কী হল? স্থানীয় সূত্রে খবর, ছাগলটি বেঁচে গিয়েছে। তবে ইকবালের যে ছেলে মুন্তাকিম কুয়োর ভেতর নেমেছিলেন তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মনে করা হচ্ছে কুয়োর মধ্য়ে বিষাক্ত গ্যাস জমা হয়েছিল। সেই গ্যাসেই মৃত্যু হয় দুজনের। তবে পুলিশ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে। তবে এর আগেও এভাবে কুয়োতে নেমে একাধিকজনের মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।