টাওয়ার বসানোর নামে প্রতারণা, ৮ বছরে চার্জশিট জমা, পুলিশকে ভর্ৎসনা আদালতের

বর্তমানে অনলাইনে প্রতারণা বাড়ছে। একইভাবে টাওয়ার বসানোর নামে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে টাকা হারাচ্ছেন গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষ। সেরকম একটি প্রতারণার মামলায় ৮ বছর পর চার্জশিট জমা দেওয়ায় রাজ্য পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছে এবার থেকে তদন্তকারী অফিসারকেই আদালতে চার্জশিট জমা দিতে হবে। 

আরও পড়ুন: মোবাইল টাওয়ার বসানোর ফাঁদ, ভুয়ো কল সেন্টার খুলে প্রতারণা,মূল পান্ডা-‌সহ ধৃত ১৩

মামলার বয়ান অনুযায়ী, ২০১৪ সালে টাওয়ার বসানোর নামে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের নন্দকুমার থানা এলাকার এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ ছিল, একটি সংস্থা থেকে ফোর জি টাওয়ার বসানোর নামে প্রথমে তাঁকে ফোন করা হয়। ফোনে প্রতারকরা জানায়, টাওয়ার বসানোর জন্য জায়গা প্রয়োজন। সেই জায়গা দিলে তাঁদের পরিবারের দুজনকে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকাও দেওয়া হবে। এরকম লোভনীয় প্রস্তাব পেয়ে হাতছাড়া করতে চাননি ওই ব্যক্তি। স্বাভাবিকভাবেই তিনি খুশি হয়েছিলেন। তখনও তিনি বুঝতে পারেননি যে তিনি প্রতারণার ফাঁদে পা দিতে চলেছেন। অভিযোগ, এর পরে প্রতারকরা প্রথমে কিছু টাকা তাঁর কাছ থেকে নেয়। এভাবেই ধাপে ধাপে কয়েক লক্ষ টাকা তাঁর কাছ থেকে নিয়ে নেয় প্রতারকরা। শেষে তিনি জানতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সেই ঘটনায় সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান ওই ব্যক্তি। তার ভিত্তিতে পুলিশ নিউটাউন থেকে ওই সংস্থার ১৫ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের আদালতে তোলা হলে সেখানে চারজনের পুলিশ হেফাজত দেন বিচারক ও বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। কিন্তু, চার্জশিট না মেলায় অবশেষে আদালত তাদের জামিন দিয়ে দেয়। সেই মামলায় গত বছরের ডিসেম্বরে চার্জশিট দেয় পুলিশ। 

পরে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে রাজ্য পুলিশ তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। ২০১৪ সালে মামলা দায়ের হওয়ার পরেও কেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চার্জশিট? এত দেরি কেন হল? তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে ডেকে পুলিশ কর্মীদের ভালো করে আইপিসি এবং সিআরপিসি শেখাতে বলে হাইকোর্ট।  তারপর আদালত নির্দেশ দেয় এবার থেকে শুধুমাত্র মামলার তদন্তকারী অফিসাররা চার্জশিট জমা দেবেন।  সেই নির্দেশ যাতে কার্যকর করা হয় সে বিষয়ে ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।