ISL 2023-24: Mohun Bagan SG Coach Juan Ferrando Says Its More Important To Win Trophy Than To Win Derby Match

কলকাতা: গত তিন মরশুমে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের একটি ম্যাচেও তাদের হারাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল এফসি। কলকাতা ডার্বি দেখার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন যে সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা, তাদের কাছে এর চেয়ে বড় গর্বের বিষয় আর কিছু নেই। তবে ডার্বি জয়ের চেয়েও চ্যাম্পিয়ন হওয়াকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কোচ হুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando)।

বুধবার কলকাতায় আইএসএল (ISL) আয়োজিত মিডিয়া ডে-তে অংশ নিয়ে গতবারের নক আউট চ্যাম্পিয়নদের কোচ বলেন, ‘ডার্বি জেতা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কিন্তু ডুরান্ড কাপে আমরা প্রথম ডার্বিতে হেরে যাই। তা সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এটাও সমর্থকেরা মোটেই খারাপ ভাবে নেয়নি। ডার্বি আরও পাঁচটা ম্যাচের মতো একটা ম্যাচ। কিন্তু ট্রফি জয় মানে নতুন ইতিহাস রচনা করা। আইএসএলে আমাদের লক্ষ্য ট্রফি জেতা। ডার্বি জয়ের চেয়ে এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

কোচের এই বক্তব্যে যদিও ডার্বি সম্পর্কে সমর্থকদের আগ্রহ এতটুকু কমবে না। ডুরান্ড কাপ জয় দিয়ে মরশুম শুরু করার ফলে প্রিয় দলের কাছে তাদের প্রত্যাশাও আকাশ ছোঁয়া। এই চাপ কী করে সামলাবেন, জানতে চাইলে ফেরান্দো বলেন, ‘মোহনবাগানের মতো বড় ক্লাবে কাজ করতে এলে চাপ থাকবেই। প্রত্যেক ম্যাচে জেতার চাপ থাকে। সব ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে ডুরান্ড কাপ জয় এখন আমাদের কাছে অতীত। এখন আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। নতুন মরশুম কঠিন হবে। তাই প্রতি দিনই আমাদের উন্নতি করতে হবে।’

তবে আইএসএলের খেতাব ধরে রাখার চাপ নিয়ে বোধহয় একটু বেশিই চিন্তিত সবুজ-মেরুন কোচ। বলেন, ‘খেতাব ধরে রাখা সত্যিই কঠিন। তবে এটা আমাদের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন লক্ষ্য। এখনও পর্যন্ত পরপর কোনও দল আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আমরা পারলে সেটা ইতিহাস হবে। সামনে এএফসি কাপ, আইএসএল দুটোই আছে আমাদের। খুবই কঠিন কাজ। তবে এতে সাফল্য পাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

কাজটা আরও কঠিন করে তুলতে পারে ম্যাচের মাঝখানে কম সময়। একই সঙ্গে আইএসএল ও এএফসি কাপ খেলতে হওয়ায় মোহনবাগান এসজি-কে ঘন ঘন ম্যাচ খেলতে হবে এই মরশুমে। এই নিয়ে তাদের কোচ বলছেন, ‘দু’দিনের ব্যবধানে ম্যাচ থাকলে দলের সবারই সমস্যা হয়। এ বারও আছে। সত্যিই কঠিন। তবে আমাদের বড় ক্লাব। আমি সেই ক্লাবের কোচ। আমাদের ম্যাচ জিততেই হবে। আমি যথেষ্ট অনুশীলন না পেয়ে অখুশি হতে পারি। কিন্তু বড় ক্লাবের কোচ হিসেবে আমি খুশি। এই সমস্যা থাকবেই।’ যোগ করবেন, ‘শুরুতেই জোড়া হোম ম্যাচ। ফলে সুবিধাই হবে আমাদের। সহজও হবে। তবে ম্যাচের সময় কম। তাই প্রতি ম্যাচ কঠিন হবে।  আমাদের প্রথম দুই ম্যাচই জিততে হবে।’  

ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চান ফেরান্দো। বলেন, ‘আমরা এ বারেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য উজ্জীবিত। আরও এগারোটা দলও ভাল প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওরাও সেরাটা দিতে চায়। আমাদের লক্ষ্য প্রথম ম্যাচ জিতে তিন পয়েন্ট অর্জন করা। এর পর প্রতি ম্যাচ জিতে ট্রফির কাছে পৌঁছতে হবে। ম্যাচ ধরে ধরে এগাতো হবে আমাদের। ট্রফি জেতা এবং বজায় রাখা দুটোই কিন্তু বেশ কঠিন কাজ।’

এর মধ্যেই আবার সবুজ-মেরুন শিবিরে দুঃসংবাদ, তারকা উইঙ্গার আশিক কুরুনিয়ান ভারতীয় দলের হয়ে তাইল্যান্ডে কিংস কাপে খেলতে গিয়ে চোট পেয়েছেন। এই নিয়ে অবশ্য ফেরান্দোর কাছে স্পষ্ট কোনও খবর নেই বলে জানালেন তিনি। বলেন, ‘আশিকের চোট নিয়ে আমি বেশি কিছু জানি না। ওকে চিকিৎসক দেখাতে হবে, তার পরে সিদ্ধান্ত নেব। ওর চোটের ব্যাপারে ফেডারেশনই আমাদের জানিয়েছে। আমার দলের প্রত্যেকেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কেউ চোট পেয়ে ছিটকে গেলে আমি হতাশ হয়ে যাই। তবে এটা ফুটবলেরই অঙ্গ এবং ওকে সাহায্য করাটা এখন আমাদের দায়িত্ব। ওর জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল। এখন জানি না, ও কবে ফের সুস্থ হয়ে উঠবে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে ওর জন্য। তবে ওর সঙ্গে আর কিছু হয়েছে কি না জানি না।’

গত মরশুমেও চোট সমস্যায় জর্জরিত ছিল সবুজ-মেরুন শিবির। তা সত্ত্বেও তারা নক আউট চ্যাম্পিয়ন হয়ে লিগ শেষ করে। তাই চোট নিয়ে অযথা হাহুতাশ করতে নারাজ ফেরান্দো। বলেন, ‘চোট নিয়ে অযথা কান্নাকাটি করে লাভ নেই। পরিস্থিতি সামলাতে হবে। এটা চ্যালেঞ্জ। দুদিন ছাড়া ছাড়া পরিকল্পনা তৈরি করা, দল তৈরি করা, এগুলোই কঠিন কাজ। এ সবের পরে মরশুমের শেষে আশা করি সব কিছু ভাল হবে।’

এ বার ফেরান্দোর সঙ্গে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সংসারে রয়েছে আন্তোনিও লোপেজ হাবাসও, যাঁকে আইএসএলের অন্যতম সফল কোচ বলা হয়। তিনি এ বার টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের ভূমিকায় রয়েছেন ফেরান্দোর সঙ্গে। হাবাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উনি এই লিগে অনেক দিন ধরে কাজ করছেন। উনি ক্লাবকেও খুব ভাল করে জানেন। ওঁর সঙ্গে আমার দল নিয়ে, ফুটবলারদের নিয়ে কথা হয়। ফুটবল নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়। রোজই কথা হয় ওঁর সঙ্গে। দলের আরও উন্নতি কী করে করা যায়, সেই নিয়ে। অনুশীলনে কী কী হবে, সেই নিয়েও কথা হয়। উনি সঙ্গে থাকায় আমার অনেক সুবিধা হয়েছে।’   

এ মরশুমে দলের অন্যতম অধিনায়ক শুভাশিস বোসও সাফল্য নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।  এ দিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ডুরান্ড কাপে আমরা অনেক আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছি। আমরা এ বারও আইএসএল ট্রফি জেতার চেষ্টা করব। ডুরান্ড কাপের সাফল্যই আমাদের আইএসএলে সাহায্য করবে। মরশুমের প্রথমেই সাফল্য পেয়েছি আমরা। খুবই ভাল দল হয়েছে আমাদের। আমরা খেলছিও ভাল। ড্রেসিংরুমের পরিবেশও খুবই ভাল। অধিনায়ক হিসেবে এই ব্যাপারগুলো আমাকে খুবই সাহায্য করছে। আশা করি, এ বারেও ভাল খেলব, চ্যাম্পিয়ন হব। কোচের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করাই আমাদের প্রধান কাজ। সেটাই করব আমরা।’

গতবার দলে কোনও বিশেষজ্ঞ স্ট্রাইকার না থাকায় দিমিত্রি পেত্রাতসকে আক্রমণের সিংহভাগ সামলাতে হয়েছিল। তিনি সেই ভূমিকায় সফলও হন। এ বার জেসন কামিংস, আরমান্দো সাদিকু, সাহাল আব্দুল সামাদ, আশিক কুরুনিয়ানরা থাকায় তাঁর কাজটা অনেক সহজ হবে বলে মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন বিশ্বকাপার। গতবার দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা বলেন, ‘এবার আমাদের অনেক ভাল ভাল খেলোয়াড় সই করেছে। ফলে এই মরশুমে আমাকে সাহায্য করার জন্য লোক পাওয়া যাবে। তবে আমাকে আমার কাজে ফোকাস করতে হবে এবং সেরাটা দিতেই হবে।’

আরও পড়ুন: অধিনায়ক সুনীলই, সন্দেশ-গুরপ্রীতকে ছাড়ল না ক্লাব, এশিয়ান গেমসের দলে কারা সুযোগ পেলেন?

আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন

https://t.me/abpanandaofficial