কঙ্গোয় নিয়োগ চলাকালীন চরম বিশৃঙ্খলা, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ৩৭ জনের, আহত ১৪৫

মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল কঙ্গোয়। সেনাবাহিনীতে নিয়োগকে কেন্দ্র করে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হল। রাজধানী ব্রাজাভিলের একটি স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ চলাকালীন পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল ৩৭ জনের। এছাড়াও ১৪৫ জন আহত হয়েছেন। মৃত এবং আহতদের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। আহতদের ব্রাজাভিলের হাসপাতালগুলিতে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার পরেই নিয়োগ প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে প্রশাসন। এই ঘটনার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন প্রার্থীরা।

আরও পড়ুন: পুরীর জনগন্নাথ মন্দিরে হুলস্থুল কাণ্ড, পদপিষ্ট হয়ে আহত ৩০ ভক্ত

কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কঙ্গোয় সেনাবাহিনীতে ১৫০০ শূন্য পদে ব্রাজাভিলের মিশেল ডি’অরনানো স্টেডিয়ামে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছিল। গত কয়েকদিন ধরেই এই স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তাকে ঘিরে সেখানে প্রচুর বেকার যুবকের ভিড় হচ্ছে। সোমবার সেখানে হাজার হাজার যুবক নিয়োগের আশায় ভিড় করেন। তাতেই চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। প্রার্থীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে কেউ জোর করে স্টেডিয়ামের গেট খোলার চেষ্টা করেছিলেন আবার কেউ স্টেডিয়ামের দেওয়াল ধরে লাফিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। ধাক্কাধাক্কির জেরে ভিড়ে মাটিতে পড়ে যান।বহু যুবক। তাতেই পদপিষ্ট হয়ে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়। একজন প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল? তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যুবকরা স্টেডিয়ামের একটি গেটে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলে অনেকেই মাটিতে পড়ে যান। যদিও সরকারের দাবি এই ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা হল ৩১ জন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত এক প্রার্থীর কথায়, সেখানে প্রচুর সংখ্যক যুবক জড়ো হয়েছিলেন। অনেকেই গেট দিয়ে ঢোকার জন্য ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। তার জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। অন্য এক প্রার্থীর বলেন, ‘আমার সামনে প্রচুর যুবক ছিলেন। কয়েকজন মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন। আমিও তাদের উপরে পড়ে যায় এবং অন্যান্য যুবকরা আমাদের উপরে পড়ে যায়। তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি অ্যাম্বুলেন্সে ছিলাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, শহরের একটি মর্গে কয়েক ডজন লাশ রয়েছে।

স্থানীয় অধিকার এনজিওর প্রধান, ট্রেসর এনজিলা ঘটনায় সরকারকে দায়ী করেছেন। তিনি ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, কঙ্গো সরকার দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে অক্ষম। প্রসঙ্গত, ৫০ লক্ষ মানুষের বসবাস ছোট এই দেশে। সেখানে তেল এবং গ্যাসের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও দেশটিতে ব্যাপক দারিদ্রতা রয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্কের মতে, এই দেশে বেকার যুবকের সংখ্যা প্রায় ৪২ শতাংশ।