পাটুলিতে চুরি কয়েকশো জলের মিটার, আটকাতে তালা–চাবি দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুরসভার

কলকাতা পুরসভায় জলের অপচয় একটি বড় সমস্যা। তাই জলের অপচয় রুখতে কয়েকবছর আগে মিটার বসানোর কাজ শুরু করেছিল কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জলের মিটার বসানো হয়েছে। এছাড়াও পাটুলি, গড়িয়া, যাদবপুর প্রভৃতি এলাকা অর্থাৎ ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে জলের মিটার বসানোর কাজ হয়েছে। কিন্তু, আস্ত জলের মিটারই চুরি হয়ে যাচ্ছে। পাটুলি এলাকায় কয়েকশো মিটার চুরি হয়ে গিয়েছে। যা শুনে কার্যত অবাক পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই অবস্থায় চুরি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন মেয়র।

আরও পড়ুন: পুর এলাকার প্রতিটি বাড়িতে বসবে জলের মিটার, কেন এই উদ্যোগ? খরচ দেবে কে?

জলের অপচয়ের পরিমাণ জানার জন্য ২০১৭ সালের অগস্ট মাসে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কলকাতা পুরসভা ১ থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাশীপুর থেকে বেলগাছিয়া অঞ্চল পর্যন্ত মিটার বসানোর কাজ শুরু করে। ওই অঞ্চলের মিটার বসানোর পর ৫২ শতাংশ জলের অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়েছে। পুরসভার সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে টালা প্রকল্পের ১৮ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ প্রতিদিন ওই ৬ টি ওয়ার্ডে করা হত। তাতে অপচয় হত ৯ মিলিয়ন গ্যালন জল। কেন এত পরিমাণ জল অপচয় হচ্ছে? তা খতিয়ে দেখে পুরসভার আধিকারিকরা জানতে পারেন ওই অঞ্চলে বহু বাড়ির জলে ট্যাঙ্কে ফাটল রয়েছে। তাছাড়া ওই এলাকায় যে সমস্ত জলের পাইপ লাইনে রয়েছে সেগুলি ব্রিটিশ আমলের। সেগুলির অনেক জায়গায় ফাটল ছিল। তাই নতুন পাইপলাইন পাতা হয়। তারপর সেই সমস্ত এলাকায় জলের অপচয় বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। এরপর পাটুলি, গড়িয়া, যাদবপুর প্রভৃতি এলাকা অর্থাৎ ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে জলের মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। সেইমতোই বসানো হয় মিটার।

বাসিন্দাদের দাবি, শীতের সময় সন্ধ্যে তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে, রাস্তাঘাট শুনশান হয়ে যাচ্ছে। সেই সুযোগেই কেউ বা কারা জলের মিটার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পাটুলি এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ জলের মিটার চুরি হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, কেআইআইপির সঙ্গে যৌথভাবে বসানো হয়েছিল জলের মিটার। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এক একটা জলের মিটারের দাম প্রায় ৫ হাজার টাকা। সেই হিসেবে ৪০০ বাড়ি মিটার চুরি মানে ২০ লক্ষ টাকা চুরি। 

খবর পেয়ে ফিরহাদ ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি জল সরবরাহ বিভাগের ডিজির সঙ্গে আলোচনা করেন। জানা গিয়েছে, কাশীপুর এলাকায় প্রায় ৮ হাজার উপরের বাড়িতে জলের মিটার রয়েছে। এই অবস্থায় সেখানেও জলের মিটার চুরি আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই চুরি ঠেকানোর জন্য মিটার বসানোর প্রক্রিয়ার উপর বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, মিটার বসানোর পর তা কোনও ধাতব কভার দিয়ে আটকে তালা চাবি দেওয়া হবে। একটি তালা থাকবে পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের কাছে। অন্যটি বাড়ির মালিকের কাছে। তবে মেয়েরের পরামর্শ, সেক্ষেত্রে ধাতব ঢাকনাও চুরি হয়ে যেতে পারে। তাই প্রয়োজনে মাটির তলায় মিটার বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।