শহরের হকারদের একসারিতে আনা হবে, বর্ষবরণের প্রাক্কালে বড় সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভার

কলকাতা শহরে একটা বড় সমস্যা হকার। ফুটপাত, রাস্তা মিলিয়ে যত্রতত্র দোকান লাগিয়ে বসে পড়ার জেরে সাধারণ মানুষের চলাফেরায সমস্যা তৈরি হয়। এই নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা যায় আমজনতাকে। বড়বাজার, শিয়ালদা, মানিকতলা, বউবাজার, মৌলালি থেকে গড়িয়াহাট—হকারদের পসরা সাজিয়ে বসা নিয়ে নানা অসুবিধা হয়। তাই এইসব ব্যস্ত এলাকার ফুটপাথে একলাইনে হকারদের বসানোর পরিকল্পনা করছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শহরে হকার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গঠিত টাউন ভেন্ডিং কমিটির বৈঠকে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানেই ঠিক হয়, ২০২৪ সালের গোড়ায় এই কাজে যৌথভাবে হাত দেবে কলকাতা পুরসভা, টাউন ভেন্ডিং কমিটি এবং কলকাতা পুলিশ।

এদিকে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, সাধারণ মানুষের চলাফেরার কথা ভেবে এবং পথ দুর্ঘটনা এড়াতে গ্র্যান্ড হোটেলের গাড়ি বারান্দার নীচের ফুটপাথে যেমন করা হয়েছে, এই সব ব্যস্ত এলাকায় ফুটপাথের এক তৃতীয়াংশে কেটে দেওয়া হবে লক্ষ্মণরেখা। তাতে অনেকটা সমস্যার সমাধান হবে। ওই ফুটপাথের বাকি অংশে ফাঁকা থাকবে পথচলতি মানুষদের যাতায়াতের জন্য। গোটা শহরের ফুটপাথেই হকারদের জন্য এই নিয়ম চালু করতে চাইছে পুরসভা ও প্রশাসন। তার জেরে সৌন্দর্যায়নও হবে। দেখতে ভাল লাগবে। কলকাতা এখন বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেশি। তাই তাঁদের আকর্ষণের বিষয়টিও ভাবা হয়েছে।

অন্যদিকে কলকাতার ব্যস্ত এলাকার ফুটপাথে হকারদের দৌরাত্ম্য ও জুলুমবাজির অভিযোগও উঠেছে বিস্তর। সে কথা পৌঁছে গিয়েছে কলকাতা পুরসভার কানে। তাই এসব বরদাস্ত করতে রাজি নন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই নিয়ে রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ অফিসারদের কানেও পৌঁছেছে একাধিক অভিযোগ। এই নিয়ে ক্ষুব্ধ আমজনতা। এমনকী জনগণকে ঠকানো পর্যন্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয় থেকেও এই হকারদের দৌরাত্ম্য নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। যা জেনেছে কলকাতা পুরসভা, টাউন ভেন্ডিং কমিটি এবং পুলিশ।

আরও পড়ুন:‌ ‘‌তাদের উৎসাহ সত্যিই অনুপ্রেরণা দেয়’‌, রাশিয়ায় কবিগুরুর নামাঙ্কিত স্কুলে ঘুরে পোস্ট জয়শঙ্করের

কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে বড়বাজার এলাকার দুই বিজেপি কাউন্সিলর মীনাদেবী পুরোহিত এবং বিজয় ওঝাকে হকারদের দাপট নিয়ে সরব হতে দেখা যায়। কলকাতা পুরসভা হকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি বৈঠকও করেছে। সেখানে টাউন ভেন্ডিং কমিটি এবং কলকাতা পুলিশের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, দ্রুত বড়বাজার, শিয়ালদা, মৌলালি, বউবাজার এলাকার হকারদের নিয়ে সমীক্ষা করা হবে। তারপর প্রত্যেকটি এলাকায় মোট কত হকার রয়েছেন সেটি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করা হবে। আর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।