লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার আগেই বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী!‌ কেন এমন বেনজির পদক্ষেপ?‌

সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এখনও নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেনি জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তবে শীঘ্রই তা হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। এই আবহে বাংলার নির্বাচনের ইতিহাসে বেনজির ঘটনা ঘটতে চলেছে। মার্চ মাসের আগে লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হবে না। কিন্তু চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই বাংলায় আসতে চলেছে প্রায় ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি। আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তে এই নিয়ে আলোচনা করছেন মানুষজন। এমনিতেই বাংলায় কাশ্মীরের থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এবং প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে যায়। তার পরই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এটাই নিয়ম। কিন্তু এবার একটু চেনা পথের বাইরেই হাঁটছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে একমাস ধরে জমা পড়া রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত রিপোর্ট। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না নির্বাচন কমিশন। তার জন্যই আগেভাগে আধাসেনা নিয়ে এসে বাংলার স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে রুট মার্চ এবং এরিয়া ডমিনেশনের কাজ করা হবে।

অন্যদিকে এটা ঘটলে আগাম ভারী বুটের শব্দে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। তাছাড়া নির্বাচন ঘোষণার প্রাক্কালে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হলে নির্বাচন কমিশনের আইনি ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। যদিও জাতীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ভোট ঘোষণা না হলেও গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নির্বাচন কমিশন রাজ্যকে এই সংক্রান্ত সুপারিশ করতেই পারে। তবে সন্দেশখালি নিয়ে পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচন পর্বে রাজ্যে মোতায়েনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ৯২০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন।

আরও পড়ুন:‌ সন্দেশখালিতে এবার সফরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়!‌ বিজেপির কর্মসূচির পরই কি আসরে তৃণমূল?

এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং মার্চ মাসের প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের রাজ্যে আসার খবর চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। গতকালই বাংলার প্রত্যেকটি লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে কতগুলি স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে তার তালিকা জেলাশাসকদের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আবার স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলির তালিকাও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। এমনকী ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় স্পর্শকাতর বুথ ও স্পর্শকাতর অঞ্চলের সংখ্যা বেড়ে থাকলে সেটাও নির্দিষ্ট করে জেলাশাসকদের জানাতে হবে। জেলাশাসকদের পাঠানো তালিকা এবং কমিশনের কাছে থাকা তথ্য বিচার করেই চূড়ান্ত হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনারদের নিয়ে বৈঠক করবেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক।