মার্কিন মুলুকে বন্দুকবাজের গুলিতে খুন বাংলার পুরুষ নৃত্যশিল্পী, দেহ এল বীরভূমে

বাংলার পুরুষ নৃত্যশিল্পীর দেহ আমেরিকা থেকে এল বীরভূমে। ঠিক ২০ দিন পর দেহ এল বঙ্গে। পুরুষ নৃত্যশিল্পী অমরনাথ ঘোষের কফিনবন্দি নিথর দেহ দেখেই উঠল কান্নার রোল। বীরভূমের দেশের বাড়িতে এখন ভিড় করেছেন পড়শিরা। আমেরিকা থেকে এই পুরুষ নৃত্যশিল্পীর মৃতদেহ সিউড়ির রবীন্দ্র সদনে আসে। অমরনাথ ঘোষের মৃতদেহ দেখে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন সিউড়ির সংগীত এবং নৃত্য জগতের মানুষেরা। তাঁদের পক্ষ থেকে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। অমরনাথ ঘোষের কাকা, কাকিমার শোকে কথা বলা বন্ধ হয়েছে।

এদিকে পুরুষ এই নৃত্যশিল্পী অমরনাথ ঘোষ সিউড়ির রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা ছিলেন। পেশার তাগিদে এই নৃত্যশিল্পী থাকতেন আমেরিকায়। সেখানে পিএইচডি করছিলেন। কুড়ি দিন আগে অমরনাথ ঘোষের এক আত্মীয়কে ফোন করে তাঁর আমেরিকার এক বন্ধু জানান, অমরনাথের মৃত্যু হয়েছে। রাস্তায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই খবর পেয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে পরিবার। কারণ সরকারিভাবে ওই দেশ থেকে তখনও পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি। এই খবর শুনে তখন অমরনাথের পরিবার জেলা প্রশাসন ও পুলিশের দ্বারস্থ হয়।

আরও পড়ুন:‌ বর্ধমান–দুর্গাপুর, আসানসোল এবং বীরভূমে ভোট কবে?‌ রাঢ়বঙ্গে এবার জমজমাট লড়াই

অন্যদিকে এই খবর নিশ্চিত করতে অমরনাথের পরিবার আমেরিকায় বসবাসকারী সম্পর্কে দিদি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করন। তিনি খোঁজ নিয়ে মৃত্যুর খবর দেন। আর তখনই ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। মার্কিন মুলুকে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, সেন্ট লুইসে গুলি করে বাঙালি নৃত্যশিল্পী অমরনাথ ঘোষকে খুন করা হয়েছে। এই খবর চাউর হতেই কড়া নজরে দেখছে ভারত। বাঙালি নৃত্যশিল্পী অমরনাথ ঘোষের খুনের তদন্তে সেন্ট লুইস পুলিশকে জোরদার তদন্ত করতে বলেছে ভারত সরকার। এক অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকবাজ গুলি করে খুন করেছে অমরনাথকে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে। অভিযুক্তকে শনাক্ত করার কাজ চলছে।

এই ঘটনা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কেন এমন ঘটনা ঘটল?‌ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অমরনাথের পরিবারকে সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানিয়েছে ভারতীয় দূতাবাস। কিন্তু তাতে মন মানছে না। গোটা গ্রাম যেন কাঁদছে, এমন অবস্থা বীরভূমে। আমেরিকায় বন্ধু অমরনাথ ঘোষের মৃত্যুতে সঠিক তদন্ত চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিনেত্রী দেবলিনা ভট্টাচার্য। প্রয়াত শিল্পী পরিবারের একমাত্র সন্তান। বাবা–মা আগেই প্রয়াত হন। মায়ের মৃত্যুর তিন বছরের মাথায় মারা গেলেন অমরনাথ। আজ, শনিবার অমরনাথের দেহ এসে পৌঁছল সিউড়ির বাড়িতে। আর শোনা যাবে না, ‘‌মম চিত্তে নৃতে নৃত্যে কে যে নাচে’‌।