Student suicide: হাত ভাঙায় স্কুলে যেতে পারেনি ছাত্র, পরীক্ষায় বাধা হেডমাস্টারের, আত্মঘাতী পড়ুয়া

শারীরিক অসুস্থতার জেরে বেশ কয়েক সপ্তাহ স্কুলে যেতে পারেনি ছাত্র। অনুপস্থিত থাকার কারণ দেখিয়ে ছাত্রকে পরীক্ষায় বসতে দেননি প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষককে ডাক্তারের নথিপত্র দেখানোর পরেও তিনি পরীক্ষায় বসতে দেননি। এমনকী ওই ছাত্রকে মারধর পর্যন্ত করেন প্রধান শিক্ষক। সেই ঘটনার পরেই আত্মঘাতী হল দশম শ্রেণির ওই পড়ুয়া। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে। এই ঘটনায় শক্তিগড়ের সফদর হাশমি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ঘোষকেই দায়ী করেছেন মৃত ছাত্রের পরিবার। মৃত পড়ুয়ার নাম ওসমান গনি চৌধুরী। প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবীতে স্কুলের সামনে ওসমানের দেহ রেখে বিক্ষোভ করেন পরিবারের সদস্যরা।

আরও পড়ুন: চুরির অভিযোগে স্কুলেই বিবস্ত্র করে চালানো হল তল্লাশি, অপমানে আত্মঘাতী ছাত্রী

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি দুর্ঘটনায় হাত ভেঙে গিয়েছিল ওসমানের। সেই কারণে সে ১৫ দিন স্কুলে যেতে পারেনি। বাড়িতেই ছিল। সেরে ওঠার পর গত সোমবার স্কুলে যায় ওসমান। ওইদিন থেকে দশমের ইউনিট টেস্ট শুরু হয়েছিল। ছাত্রটি সঙ্গে যাবতীয় নথি পত্র নিয়ে গিয়েছিল স্কুলে। প্রধান শিক্ষককে চিকিৎসার যাবতীয় দেখিয়েছিল ছাত্রটি। কিন্তু, প্রধান শিক্ষক স্পষ্ট জানিয়ে দেন পরীক্ষায় বসা যাবে না। এ নিয়ে ওই ছাত্রর সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বচসা বাঁধে। তখন ওসমানকে জুনিয়ার ছাত্রদের সামনে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক বলে অভিযোগ। শেষে পরীক্ষা না দিয়েই বাড়ি ফিরে যায় ওসমান। পরে দুপুরে বাড়ি থেকে ওই কিশোরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। 

পরিবারের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের অমানবিকতার কারণে তাদের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ওসমানের বাবা একজন পরিযায়ী শ্রমিক। তিনি হায়দরাবাদের একটি কারখানায় কাজ করেন। ঘটনার খবর পেয়ে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। তার অভিযোগ স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং পরিচালন সমিতির সভাপতি মিলে তাদের সন্তানকে মারধর করেছ। সেই কারণে অপমানে ও লজ্জায় সে আত্মঘাতী হয়েছে। 

এদিকে, তার দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার স্কুলের সামনে দেহে রেখে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পরে গা টাকা দেন প্রধান শিক্ষক। অন্যান্য শিক্ষকরা স্কুলে যাননি। পরে খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। তারা প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রতিশ্রুতি দিলে অবশেষে বিক্ষোভ তুলে নেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের অভিযোগ,এই ঘটনার সঙ্গে মোট ৩ জন জড়িত রয়েছে।

প্রতিবেশীদের বক্তব্য, একজন ছাত্র পরীক্ষা দিতে চাইছে অথচ স্কুল তাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এটা একেবারেই উচিত হয়নি। যদিও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি শেখ কামাল হাসান দাবি করেছেন, তিনি এর সঙ্গে জড়িত নন। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। মৃত ছাত্রের বাবা জানান, তারা বলে দোষীরা ছাড় পাবে না। অন্যদিকে, এই ঘটনায় জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন বলে দাবি করেছেন।